২ মার্চ ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবদেক : নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির অদূরেই সিলেট প্রধান ডাকঘর থেকে শুরু করে কুদরত উল্লাহ মার্কেটের সামনে দীর্ঘ দিন থেকে গড়ে উঠেছে অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড। এই এলাকার ফুটপাতও সন্ধ্যা থেকে চলে যায় হকারদের দখলে। ফলে প্রতিনিয়ত এই রাস্তায় চলাচলকারীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। এই সংকির্ণ রাস্তার মধ্যেই প্রতিদিন ৪০/৫০টি সিএনজি দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠায়। গদাগদি করে অটোরিক্সা পার্কিং করতে গিয়ে প্রায়ই একটির সাথে আরেকটির ধাক্কা লাগে। এতে ছোটখাটো বাকবিতাণ্ড ও হাতাহাতির ঘটনা নিত্য দিনের। বুধবার রাতে দুই চালকের মধ্যে হাতিহাতির ঘটনায় এক চালক মারা যাওয়ার ঘটনার সূত্রপাতও একই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে প্রধান ডাকঘরের সামনে রাস্তা গাড়ি পার্কিং করতে গিয়েই আমিরুলের সিএনজি অটোরিক্সার সঙ্গে ধাক্কা লাগে আলমগীর সিএনজি অটোরিকশার। এ নিয়ে দুই চালকের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও গালিগালাজ হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। হঠাৎই আমিরুলের বুকে সজোরে লাথি মারেন আলমগীর। ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান আমিরুল। উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আমিরুলকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আমিরুল ইসলাম (৩০) সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানাধীন কান্দিরগাঁও গ্রামের মৃত ইদন মিয়ার ছেলে ও একই থানা এলাকার টুকেরবাজার ঘোপাল গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর ঘটনার পর ‘ঘাতক’ সিএনজি অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেনকে (৩৫) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন জনতা। আলমগীর ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানাধীন কালিকুচ্চা গ্রামের মৃত খালেক মিয়ার ছেলে।
আটকের পর থানায় নিয়ে আমিরুলকে হত্যার কারণ জানতে আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, ঘটনার বিষয়ে ‘ঘাতক’ আলমগীর কোনো ধরনের অনুশোচনা না করেই বলেন, ওখানে গাড়ি রাখা ছিল আমিরুলের। তার গাড়ির সঙ্গে লাগতেই গালি দেয়। এতে ক্ষেপে গিয়ে আমি ঝগড়া শুরু করি। আমিরুল আমার কপালে ঘুষি মারে দাবি। এতে আরও রেগে গিয়ে আমি তার বুকে লাথি মারি। সে রাস্তায় পড়ে অজ্ঞান হয়।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, দুই চালকের মধ্যে মারামারি ঘটনায় একজনের লাথিতে অপর জনেরর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেনকে আটক করা হয়েছে। আর নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে আমিরুল তৃতীয়। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। উপার্জনের তাগিদে এদিন সকালে তিনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে আসেন। পরিবারের লোকজন রাতে তার মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে গিয়ে আমিরুলের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তারা হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় প্রধান ডাকঘর থেকে কুদরত উল্লাহ মার্কেট সহ বেশ কয়েকটি স্থানে দীর্ঘ দিন থেকে এসব অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড গড়ে উঠলেও রহস্যজনক কারনে এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না পুলিশ। এমনকি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির অদূরেই এসব স্ট্যান্ড রয়েছে বহাল তবিয়তে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটে হাতাহাতি ও বাকবিতাণ্ডার ঘটনা।