২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩


ডাকাত সর্দার বাটন গ্রেফতারে স্বস্তিতে নগরবাসী

শেয়ার করুন

খলিলুর রহমান: ডাকাত সর্দার ফজর আলী ওরফে বাটন ডাকাত ধরা পড়াতে সইস্তর নিশ্বাস ফেলছেন সিলেট মেট্রোসিটির দক্ষিণ সুরমাসহ নগরবাসী। পর পর দুটি ডাকাতির ঘটনায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছিল ওই এলাকায়।

পুলিশ জানায়-সম্প্রতি ডাকাতির ঘটনা বেড়েই চলেছিল সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমা এলাকায়। কয়েকদিনের ব্যবধানে পরপর দুইটি বড় ডাকাতির ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল নগরবাসীর মধ্যে।

নানা তৎপরতা চালিয়েও কোনভাবেই যেন বাগে আনা যাচ্ছিল না এই ডাকাত দলকে। ডাকাতির ধরণ দেখে ধারণা করা হচ্ছিল কাজগুলো একই ডাকাতদলের হতে পারে। আরও ধারণা ছিল যে এই ডাকাতদল খুবই সংঘবদ্ধ এবং তাদের খুব চৌকস একজন দলনেতাও রয়েছে। পুলিশকে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছিল ডাকাদলটি। তবে পুলিশও ছেড়ে কথা বলবে কেন? লেগেই ছিল!

দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের পাশাপাশি ডাকাতদের খোঁজে রাতদিন নির্ঘুমভাবে কাজ করছিল মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা। থানা পুলিশ আর গোয়েন্দা পুলিশ উভয়ের তদন্তে একটি নাম বারবার উঠে আসছিল। দুটো ডাকাতিরই প্রধান আসামী ফজর আলী ওরফে বাটন!

এতো স্মার্ট ও ধুরন্ধর এই ডাকাত সর্দার যে ডাকাতির পর কোন ক্লু রেখে যায় না সে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায়ও খুব একটা সুবিধা করা যাচ্ছিল না। কারণ এই অতি ধুরন্ধর ডাকাত সর্দার এতোই সতর্ক যে সে বা তার দলের কেউই কোন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে না ডাকাতির আগে কিংবা পরে। তাই পুলিশকেও এগুতে হচ্ছিল তদন্তের পুরনো পদ্ধতি অনুসরণ করে।

পরপর দুটি সফল ডাকাতির পর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর এই ডাকাতদল আরেকটি ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে – এই খবর কোনভাবে পেয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ।

নগরীর কাজীরবাজার ব্রিজের (সেল্ফি ব্রিজ) উপর দিয়ে ডাকাদল পার হবে, এই খবর ছিল। ব্রিজের আশেপাশে তাই ওত পেতে ছিলেন গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার সহ তার দল। সকাল থেকে তারা অপেক্ষা করতে করতে আশার আলো সব ফুরিয়ে আসছিল। সবাই যখন আশা ছেড়ে দিচ্ছিল তখন হুট করেই অতি আকাঙ্ক্ষিত “বাটন” ডাকাতের দেখা পেয়ে গেলেন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। অতিদ্রুতই ধুরন্ধর বাটন ঘটনা টের পেয়ে যায়। বাটন ও তার সহযোগী পালাতে শুরু করলে তাকে ঝাপটে ধরে ফেলেন এক পুলিশসদস্য। সাথেসাথেই আশেপাশে ওঁৎপেতে থাকা বাকি সদস্যরা তাকে ধরে ফেলে। কিন্তু হার মানতে যেন নারাজ অতিপরাক্রমশালী ডাকাতসর্দার। আট সদস্যের সাথে ধস্তাধস্তি করে তাদেরসহ নদীতে ঝাপ দেয়ার চেষ্টা করতে থাকে সে। অনেক চেষ্টার পর অবশেষে রণে ক্ষান্ত দেয়! তার সহযোগীকে আশেপাশে থাকা লোকজন ধরে ফেলে। অনেক চেষ্টার পর এই দলের আরেক সহযোগীকে ধরতে সক্ষম হয় দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ।

ফজর আলী ওরফে বাটন ও তার সহযোগীদের ধরা পড়াতে গত কয়েকদিন ধরে আতঙ্কে থাকা সিলেট নগরবাসী স্বস্তির বিশ্বাস ফেলবে। সেই সাথে হয়তো এই নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য যারা জীবনবাজি রেখে রাতদিন খেটে যায় তাদেরকেও একটু স্মরণ করবে বরে আশা প্রকাশ করে পুলিশ।

শেয়ার করুন